Ezekiel 37 (BOBCV)
1 সদাপ্রভুর হাত আমার উপরে ছিল এবং তিনি সদাপ্রভুর আত্মায় আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি উপত্যকার মাঝখানে রাখলেন; সেটি হাড়ে ভর্তি ছিল। 2 তিনি আমাকে তার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করালেন, আর আমি সেই উপত্যকার মধ্যে অসংখ্য হাড় দেখলাম, হাড়গুলি ছিল খুব শুকনো। 3 তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে মানবসন্তান, এই হাড়গুলি কি বেঁচে উঠতে পারে?”আমি বললাম, “হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, তুমিই কেবল তা জান।” 4 তখন তিনি আমাকে বললেন, “এই হাড়গুলির উদ্দেশ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘হে শুকনো হাড়, সদাপ্রভুর বাক্য শোনো! 5 এই হাড়গুলিকে সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে নিঃশ্বাস ঢুকিয়ে দেব আর তোমরা জীবিত হবে। 6 আমি তোমাদের উপরে শিরা দেব, তোমাদের উপরে মাংস তৈরি করব এবং চামড়া দিয়ে তা ঢেকে দেব; আমি তোমাদের মধ্যে নিঃশ্বাস দেব আর তোমরা জীবিত হবে। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ” 7 আমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছিল তেমনই আমি ভবিষ্যদ্বাণী করলাম। আর আমি যখন ভবিষ্যদ্বাণী করছিলাম, তখন একটি আওয়াজ হল, একটি ঘর্ঘর শব্দ, আর হাড়গুলি প্রত্যেকটা নিজের নিজের হাড়ের সঙ্গে যুক্ত হল। 8 আমি দেখলাম, আর তাদের উপরে শিরা হল ও মাংস উৎপন্ন হল এবং চামড়া দিয়ে তা ঢাকা পড়ল, কিন্তু তাদের মধ্যে শ্বাস ছিল না। 9 তখন তিনি আমাকে বললেন, “বাতাসের উদ্দেশ্যে ভাববাণী বলো; হে মনুষের সন্তান, ভাববাণী বলো আর তাকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে বাতাস, তুমি চারদিক থেকে এসো এবং এসব নিহত লোকদের মধ্যে শ্বাস দাও যেন তারা জীবিত হয়।’ ” 10 সেইজন্য তাঁর আদেশমতোই আমি ভবিষ্যদ্বাণী বললাম আর তখন তাদের মধ্যে শ্বাস ঢুকল; তারা জীবিত হয়ে পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াল, তারা ছিল এক বিরাট সৈন্যদল। 11 তারপর তিনি আমাকে বললেন, “হে মানবসন্তান, এই হাড়গুলি হল সমস্ত ইস্রায়েল কুল। তারা বলছে, ‘আমাদের হাড়গুলি শুকিয়ে গেছে আর আমাদের আশাও চলে গেছে; আমরা মরে গেছি।’ 12 এজন্য তুমি ভবিষ্যদ্বাণী করো এবং তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে আমার লোকসকল, আমি তোমাদের কবর খুলে দেব এবং তোমাদের সেখান থেকে বার করে আনব; তোমাদের আমি আবার ইস্রায়েল দেশে ফিরিয়ে আনব। 13 আমি যখন তোমাদের কবর খুলে তোমাদের বের করে আনব তখন আমার লোকেরা জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু। 14 আমি তোমাদের মধ্যে আমার আত্মা দেব এবং তোমরা জীবিত হবে ও আমি তোমাদের নিজেদের দেশে বাস করাব। তখন তোমরা জানবে যে, আমি সদাপ্রভু এই কথা বলেছি এবং সেইমতো কাজ করেছি, সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ ” 15 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, 16 “হে মানবসন্তান, একটি কাঠের লাঠি নিয়ে তুমি তার উপর এই কথা লেখ, ‘যিহূদা ও তাঁর সঙ্গের ইস্রায়েলীদের জন্য।’ তারপর আরও একটি কাঠের লাঠি নিয়ে তার উপর লেখ, ‘যোষেফের লাঠি (মানে ইফ্রয়িমের) ও তাঁর সঙ্গের সমস্ত ইস্রায়েলীদের জন্য।’ 17 সেই দুটো লাঠি জোড়া দিয়ে একটি লাঠি বানাও যেন তোমার হাতে সেই দুটো একটি লাঠিই হয়। 18 “তোমার জাতির লোকেরা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তুমি কি এর মানে আমাদের বলবে না?’ 19 তাদের বোলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আমি যোষেফের লাঠি গ্রহণ করব—যেটি ইফ্রয়িমের হাতে আছে—এবং ইস্রায়েলীদের গোষ্ঠীগুলির যে লাঠিটি আছে আমি সেটি নিয়ে যিহূদার লাঠির সঙ্গে জোড়া দিয়ে একটি কাঠের লাঠিই বানাব, আর সেই দুই লাঠি আমার হাতে একটিই হবে।’ 20 যে লাঠির উপর তুমি লিখেছ সেগুলি তোমার চোখের সামনে তুলে ধরো 21 আর তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ইস্রায়েলীরা যেসব জাতিদের মধ্যে আছে সেখান থেকে আমি তাদের বার করে আনব এবং চারদিক থেকে তাদের জড়ো করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব। 22 ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির উপরে আমি তাদের একই জাতি করব। তাদের সকলের উপরে একজনই রাজা হবে এবং তারা কখনও দুই জাতি হবে না কিংবা দুই রাজ্যে বিভক্ত হবে না। 23 তাদের সব প্রতিমা, ঘৃণ্য মূর্তি কিংবা তাদের কোনও অন্যায় দিয়ে তারা আর নিজেদের অশুচি করবে না, কারণ আমি তাদের সব পাপ ও বিপথে যাওয়া থেকে তাদের রক্ষা করব এবং শুচি করব। তারা আমার প্রজা হবে, এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব। 24 “ ‘আমার দাস দাউদ তাদের রাজা হবে এবং তাদের পালক একজনই হবে। তারা আমার নিয়ম পালন করবে ও আমার বিধানের বিষয় যত্নবান হবে। 25 যে দেশ আমি আমার দাস যাকোবকে দিয়েছি, যে দেশে তাদের পূর্বপুরুষেরা বাস করেছে সেখানেই তারা বাস করবে। তারা, তাদের ছেলেমেয়েরা ও নাতিপুতিরা সেখানে চিরকাল বাস করবে এবং আমার দাস দাউদ চিরকাল তাদের রাজা হবে। 26 আমি তাদের সঙ্গে এক শান্তির নিয়ম স্থাপন করব; সেটি হবে একটি চিরস্থায়ী বিধান। আমি তাদের বসাব ও সংখ্যায় বাড়াব এবং আমি আমার পবিত্রস্থান চিরকালের জন্য তাদের মধ্যে স্থাপন করব। 27 আমার বাসস্থান তাদের মধ্যে হবে; আমি তাদের ঈশ্বর হব এবং তারা আমার প্রজা হবে। 28 তখন জাতিগণ জানবে যে আমিই সদাপ্রভু যে ইস্রায়েলকে পবিত্র করেছে, যখন আমার পবিত্রস্থান চিরকাল তাদের মধ্যে থাকবে।’ ”